ফাকির লালন শাঁইের জীবনী.......
আসসালামু
আলাইকুম। বন্ধুরা আপনার কেমন আছেন। নিশ্চয় ভালো আমিও ভালো আছি। আপনাদের
জন্য নিয়ে এলাম লালন শাহ্রে জীবনী নিশ্চয় আপনাদের ভালো লাগবে। লালন শাহ বা
লালন ফকির (১৭৭৪- অক্টোবর ১৭, ১৮৯০) ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী
আধ্যাত্মিক সাধকদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একাধারে বাউল সাধক,
বাউল গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। তাঁকে ‘বাউল সম্রাট’ হিসেবেও অভিহিত
করা হয়। গান্ধীরও ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাকে ‘মহাত্মা’
উপাধি দেয়া হয়েছিল।
লালন ফকির অতি জনপ্রিয় বাউল গানের স্রষ্টা হলেও
তাঁর জীবন সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পাওয়া যায় না। তিনি একজন বাঙালী যার
জন্মস্থান বর্তমান বাংলাদেশের যশোর জেলার ঝিনাইদহ মহকুমার হারিশপুর গ্রামে।
লালন শাহের জাতি বা সম্প্রদায় নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। এই প্রশ্ন তাঁর
জীবদ্দশায়ও বিদ্যমান ছিল। পারিপার্শ্বিক প্রমাণাদি থেকে অনুমিত হয়েছে যে
কথিত আছে যে, তিনি হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন, কিন্তু ছেলেবেলায়
অসুস্থ অবস্থায় তাঁর পরিবার তাঁকে ত্যাগ করে।
তখন সিরাজ সাঁই নামের একজন মুসলমান বাউল তাঁকে আশ্রয় দেন এবং সুস্থ করে তোলেন।
লালন
কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে একটি আখড়া তৈরি করেন, যেখানে তিনি তাঁর শিষ্যদের
শিক্ষা দিতেন। ১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর লালন ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার
ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন। আজও সারা দেশ থেকে বাউলেরা অক্টোবর
মাসে ছেউড়িয়ায় মিলিত হয়ে লালন শাহের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তাঁর
মৃত্যুর ১২ দিন পর তৎকালীন পাক্ষিক পত্রিকা মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত
হিতকরীতে প্রকাশিত একটি রচনায় সর্বপ্রথম তাঁকে "মহাত্মা" হিসেবে
আখ্যায়িত করা হয়। রচনার লেখকের নাম রাইচরণ।
লালনের
বেশ কিছু রচনাবলী থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে তিনি
ধর্ম-গোত্র-বর্ণ-সম্প্রদায় সম্পর্কে আদৌ শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না। ব্রিটিশ আমলে
যখন হিন্দু ও মুসলিম মধ্যে জাতিগত বিভেধ-সংঘাত বাড় ছিল তখন লালন ছিলেন এর
বিরূদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। তিনি মানুষে-মানুষে কোনও ভেদাভেদে বিশ্বাস
করতেন না। তাঁর কাছে জাতি, ধর্ম, বর্ণ এসবের কোনও মূল্য ছিল না। তিনি ছিলেন
মানবতাবাদী। একটি গানে তিনি বলেছেনঃ
“ সব লোকে কয়
লালন কি জাত সংসারে।
লালন বলে জাতের কি রূপ
দেখলাম না তা-নজরে।।”
রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর বলেছেনঃ লালন ফকির নামে একজন বাউল সাধক হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, জৈন
ধর্মের সমন্বয় করে কী যেন একটা বলতে চেয়েছেন - আমাদের সবারই সেদিকে মনোযোগ
দেওয়া উচিৎ। আরেকটি গানে লালন বলেছেন
“ সব লোকে কয়, লালন ফকির হিন্দু কি যবন।
লালন বলে, আমার আমি না জানি সন্ধান।”
লালন
ফকিরের গান "লালন গীতি" বা কখনও "লালন সংগীত" হিসেবে প্রসিদ্ধ। বাউলদের
জন্য তিনি যেসব গান রচনা করেন, তা কালে-কালে এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে মানুষ
এর মুখে মুখে তা পুরো বাংলায় ছড়িয়ে পড়ি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও
লালনের গানে প্রভাবিত হয়েছিলেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাঁর প্রায়
সহপ্রাধিক গান সংগৃহীত হয়েছে। মুহম্মদ মনসুরউদ্দিন একাই তিন শতাধিক লালন
গীতি সংগ্রহ করেছেন যা তাঁর হারামণি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এ ছাড়াও তাঁর
অন্য দুটি গ্রন্থের শিরোনাম যথাক্রমে ‘লালন ফকিরের গান’ এবং ‘লালন গীতিকা’
যাতে বহু কেবল লালন গীতি সংকলিত হয়েছে।
“ মন আমার কি ছার গৌরব করছো ভবে!
দেখ না রে সব হাওয়ার খেলা,
হাওয়া বন্ধ হতে দেরী কি হবে?
থাকতে হাওয়ার হাওয়াখানা
মওলা বলে ডাক রসনা
মহাকাল বসেছে রানায়
কখন যেন কু ঘটাবে।
বন্ধ হলে এ হাওয়াটী,
মাটীর দেহ হবে মাটী
দেখে শুনে হওনা খাঁটী
মন! কে তোরে কত বুঝাবে।।
ভবে আসার আগে যখন,
বলেছিলে কর্ম সাধন
লালন বলে সে কথা মন,
ভুলেছো এই ভবের লোভে।।”
বন্ধুরা
সময় স্বল্পতার কারণে আজ সংক্ষিপ্ত আকারে লালন শাইজীর সর্ম্পকে
লিখলাম........ পরে সময় করে শাইজীর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব ধন্যবাদ
আর হ্যাঁ কমেন্ট করে আপনার মতামত দিতে ভুলবেন না কিন্তু।
আসসালামু আলাইকুম। ভালো থাকবেন সবাই।
আবার কথা হবে নতুন কোন পোষ্টে.................
No comments:
Post a Comment